Dji Mavic Mini Drone Review bangla
গ্যাজেটঃ Dji Mavic Mini Drone
Price: ৫০-৬০ হাজারের মধ্যে(ওঠানামা করে তাই এক্সেটলি বলতে পারলাম না)
আসসালামুয়ালাইকুম।
ছোটকালে বিভিন্ন খেলনা পছন্দ ছিলনা এমন খুব কমজনই আছে।আর খেলনা যদি আকাশে উড়ে তাহলে তো কথাই নেই।আর হ্যা! আজ রিভিউ করতে যাচ্ছি বাচ্চাদের নয়,যুবকদের অত্যন্ত পছন্দের খেলনা অর্থাৎ ড্রোন নিয়ে।সকলের বুঝার সুবিধার্থে DJI Mavic Mini এর রিভিউটি কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে লিখছি।
১.বিল্ড কোয়ালিটিঃ
DJI এর যত ড্রোন আছে(Except Dji Tello) সব থেকে Cheap Build কোয়ালিটি হচ্ছে Mavic Mini এর।ওজন ২৫০ গ্রামের নিচে আনতে গিয়ে এর কোয়ালিটির অবস্থা খারাপ করে ফেলেছে DJI.হাতে নিয়েই আপনার প্লাস্টিকের খেলনা খেলনা লাগবে,যার কারনে কখনই ফ্লাই দিয়ে এটাতে কনফিডেন্ট পাবেন না।আর কখনও যদি এটা ভুলবসত এক্সিডেন্ট করেন(গাছপালা,ওয়াল এর সাথে ধাক্কা আরকি) তাহলে এটার সার্ভাইভ করার সম্ভাবনা খুবই কম।যেখানে মিনি এর কম্পিটিটিভ Dji Spark ও অনেকটা ধাক্কা সামলে নেয়।ভালো লাগার দিক হচ্ছে এটার সাইজে ছোট ও ওজনে হালকা হওয়ায় ক্যারি করতে সুবিধা পাবেন।
২.ফ্লায়িং এর অবিজ্ঞতাঃ
রিভিউ যেন লম্বা না হয় আর সবার যেন রিলেট করতে সুবিধা হয় এজন্য এখানেই রেঞ্জ,ট্রান্সমিশন সহ সব একসাথে আলোচনা করবো।সকলের বুঝার সুবিধার্থে 2.8g/5.8g এইসব ডিটেইল এ গেলাম না।আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটের ফ্লায়িং অনুযায়ী সরাসরি বাস্তব অবিজ্ঞতা শেয়ার করছি।
DJI যদিও এর রেঞ্জ ৪ কিলোমিটার বলে যথেষ্ঠ পাবলিসিটি করেছে কিন্তু আমার কাছে এটা পুরোটাই হাস্যকর লেগেছে।কারন গ্রাম এলাকার ফাকা জায়গাতেও Distance 300-400m পার হওয়ার পরেই এর সিগনাল উইক হওয়া শুরু করে।কখনও আবার 600-700m পর্যন্ত পেয়েছি কিন্তু এর পরে ট্রান্সমিশন Lost.আর Height 120-140m এর আশেপাশেই সমস্যা শুরু হয়।ট্রান্সমিশন আসে যায় এরকম অবস্থা।যার কারনে আপনার ড্রোন ফ্লায়িং এর কনফিডেন্সটা অনেকাংশেই চলে যাবে।তবে মাঝে মাঝে কোন প্লেসে ফ্লাই করছেন সে অনুযায়ী ভালো রেঞ্জ পাবেন।
৩.অনেক বেশী বাতাসে ফ্লায়িং অবিজ্ঞতাঃ
মাঝারি রকমের বাতাসে মোটামুটিভাবে সমস্যা ছাড়াই ফ্লাই করতে পেরেছি।কক্সবাজার,সেইন্টমার্টিন এ তেমন সমস্যা হয় নি।তবে হ্যা,ফ্লাই করা গেলেও মাঝারি মানের বাতাসেও শতভাগ স্ট্যাবেল থাকে না।এক্সপেরিমেন্ট এর জন্য সোজা ড্রোনকে পাঠিয়েছি আবার কোনো রোটেশন/পজিশন চেঞ্জ না করে সোজা ব্যাক আনার চেষ্টা করেছি কিন্তু সোজা ব্যাক আসতে পারেনি।বাতাসের জন্য নিজে থেকে 5-6m এর মতো সাইডে সরে গিয়েছিল।(যদিও এটা মেজর কোনো সমস্যা নয়)।
তবে পাহাড়ের উপরে যেমন সাজেকে একটু বেশী বাতাসে ৩-৪ বার ফ্লাই দেয়ার চেষ্টা করেও Mini কে আমি ফ্লাই দিতে পারি নি।একটু উপরে(20-30m) উপরে তুলতেই বাতাসে কাপাকাপি শুরু করেছিল।কন্ট্রোলার দিয়েও কন্ট্রোল করা খুব কষ্টকর হচ্ছিল।বাতাসে একদিকে চলে যাচ্ছিলো।তাই কয়েকবার চেষ্টার পরেও দূরে পাঠানোর আর সাহস করি নি।যদিও আমি যেদিন সাজেকে ফ্লাই দিয়েছিলাম সেদিন তুলনামুলকভাবে একটু বেশীই বাতাস ছিল।তারপরেও DJI Spark ও যেখানে এই মাত্রার বাতাসে এত সুন্দরভাবে ফ্লাই করা যায় Mavic Mini সেখানে হাই উইন্ড লোডই নিতে পারে নি।
৪.ক্যামেরা ও গিম্বেলঃ
এ জায়গাতে স্যটিসফেকশন খুজে পাবেন কিছুটা হলেও।কারন বাজেট হিসেবে ক্যামেরা এবং গিম্বেল এর পার্ফমেন্স আসলেই ভালো।3 Axis গিম্বেল অনেক কন্ডিশনেই আপনাকে যথেষ্ঠ স্মুথ ফুটেজ নিতে সাহায্য করবে।সব রকম কন্ডিশনেই ভিডিও কোয়ালিটিতে ভালো শার্পনেস লক্ষ্য করেছি।তবে ভিডিওতে সবকিছু অটো সেটিংস এই থাকে,DJI ফ্লাই এপ এ ম্যানুয়ালি কিছু সেটিংস করতে পারবেন না।এক্সপোসার,কন্ট্রাস্ট এগুলো ম্যানুয়ালি কন্ট্রোল অনেক সময়ই দরকার পড়ে লো লাইট এবং হার্স আলোতে।যেহেতু শুধু বিগিনারদের ফোকাস করেই DJI এই ড্রোন রিলিজ করেছে তাই হয়তো এইসব এভোয়েড করেছে তবে এটা যেহেতু সফটওয়্যার বেসড তাই DJI চাইলেই পরবর্তীতে ফার্মওয়্যার এবং এপ আপডেটের মাধ্যমে এটা এড করে দিতেই পারে।
বাজেট ড্রোন হিসেবে ব্যাটারি লাইফও যথেষ্ঠ স্যাটিসফ্যক্টরি বলা যায়।DJI অফিশিয়ালি ৩০মিনিট বললেও এভারেজ এ ২২-২৩ মিনিট পেয়েছি।তবে সবাইকে একটা জিনিস সতর্ক করতে চাই।এটা একদম মাথাতে স্থির করে নিবেন না যে সবসময়ই ২২-২৩ মিনিট পাবেন।এই চিন্তা মাথার থাকার কারনে Saint Martin এ অলমোস্ট ড্রোন পানিতে হারাতে বসেছিলাম।বাতাস বেশী থাকলে হঠাৎ ব্যাটারী অনেক নিচে নেমে যায়।Saint Martin এ হঠাৎ করেই ব্যাটারী 40% থেকে 12% এ চলে আসে(লো ব্যাটারি ওয়ারনিং খুব একটা কাজে দেয় নি) যার কারনে ব্যক আনতে পেরেছিলাম only 2% থাকা অবস্থায়(আলহামদুলিল্লাহ)।তাই বাতাস বেশী থাকলে অবশ্যই সবসময় ব্যাটারী পার্সেন্টেজ এর দিকে লক্ষ্য রাখবেন।অনেক বেশী High Wind এ ব্যাটারী ১৪-১৫ মিনিটের মতো পেয়েছি।
৬.বিভিন্ন Intelligent Modes:
যথেষ্ঠ ভালো ভালো মোডস দেয়া আছে তবে Dronie & Rocket মোড অটোতে মাত্র 40m পর্যন্ত সীমাবদ্ধতা রাখা হয়েছে।আরেকটু বেশী থাকলে ভালো হতো।কারন এত অল্প দুরত্বে স্যাটিসফ্যক্টরি ফুটেজ পাওয়া যায় না।আর Active Track Mode টা থাকলেও অনেক ভালো হতো।অনেক কন্ডিশনেই এটার প্রয়োজন খুব ভালোভাবেই Miss করেছি।
৮.কাদের জন্য এই ড্রোনঃ
-আপনি যদি একদম নতুন ইউজার হোন অর্থাৎ এ ড্রোন দিয়েই আপনার ড্রোন ফ্ল্যায়িং অবিজ্ঞতা শুরু হয় তাহলে এ ড্রোন আপনি নিতে পারেন।কারন নতুন অবস্থায় কেউই তেমন রাফ & টাফ ড্রোন ফ্লাই করে না।so, অপনার যা যা প্রয়োজন Mavic Mini তে তা পেয়ে যাবেন।
-টুকটাকভাবে যারা ওয়েডিং,সেমিনার ফটোগ্রাফি/ভিডিওগ্রাফি করেন এবং বাজেট কম তাদের জন্য এটা ভালো একটা গ্যাজেট হতে পারে।কারন ওয়েডিং কন্টেন্ট এ আপনার মুলত সাবজেক্টকেই ফোকাসে রাখতে হয় তাই এতো বেশী রেঞ্জ দরকার হয় না।তাছাড়া ভালো ক্যামেরা এবং গিম্বেল পাচ্ছেন বাজেটের মধ্যেই।
-ধন্যবাদ সবাইকে❤